বগুড়া, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রাচীন শহর, যা তার ঐতিহাসিক স্থাপনা, সংস্কৃতি এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য বিখ্যাত। এই শহরের খাবারের স্বাদ শুধু মুখেই নয়, হৃদয়েও গেঁথে থাকে। বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো “বগুড়ার দই”। এই দই শুধু স্থানীয়দের কাছেই নয়, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছেও সমানভাবে প্রিয়।
বগুড়ার দইয়ের ইতিহাস বেশ পুরনো। এটি তৈরি হয় বিশেষ পদ্ধতিতে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। গরুর দুধ, চিনি এবং একটি বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংমিশ্রণে তৈরি হয় এই দই। এর স্বাদ এতটাই মিষ্টি এবং কোমল যে, একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করে। বগুড়ার দই শুধু স্বাদেই নয়, এর গঠনেও অনন্য। এটি এতটাই ঘন যে, উল্টে দিলেও পড়ে না।
বগুড়ার আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো “চমচম”। এই মিষ্টিটি তৈরি হয় দুধ, চিনি এবং ময়দার সমন্বয়ে। চমচমের উপরে থাকে ছোট ছোট দানাদার চিনির প্রলেপ, যা এর স্বাদকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বগুড়ার চমচমের বৈশিষ্ট্য হলো এর নরম ও স্পঞ্জি টেক্সচার, যা মুখে দিলেই গলে যায়।
এছাড়াও বগুড়ার “পোলাও” এবং “কাচ্চি বিরিয়ানি” স্থানীয়দের কাছে খুবই প্রিয়। বিশেষ করে ঈদ, পূজা বা অন্যান্য উৎসবের সময় এই খাবারগুলো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে উপভোগ করা হয়। বগুড়ার পোলাওয়ে ব্যবহৃত হয় সুগন্ধি চাল, ঘি, এবং নানা ধরনের মসলা, যা এর স্বাদকে করে তোলে অতুলনীয়।
বগুড়ার খাবার শুধু পেটই ভরায় না, মনও জুড়িয়ে দেয়। এই খাবারগুলোর মাধ্যমে বগুড়ার মানুষের আতিথেয়তা এবং সংস্কৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়। তাই বগুড়ায় গেলে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো অবশ্যই চেখে দেখতে হবে। এটি শুধু খাবারের স্বাদ গ্রহণ নয়, বরং বগুড়ার ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার একটি সুযোগ।